আম্মার আদর

View this thread on: d.buzz | hive.blog | peakd.com | ecency.com
·@shaonashraf·
0.000 HBD
আম্মার আদর
মানুষের মন কখন কি চায় সে নিজেও জানে না।আজ ছোট বেলার কথা খুব মনে পড়ছে।ছোট বেলায় আমার নির্দিষ্ট খাবার ছিলো। ছোট বেলা বলতে যখন থেকে মনে আছে তখন থেকে কলেজ পর্যন্ত।আমি কোনো ধরনের শাক খেতাম না,মাছের মধ্যে রুই, ইলিশ, চিংড়ি এমন কিছু মাছ  আর মাংস খেতাম।মাংস সব ধরনের খাবো।যে কোনো মাংস আমার খুব প্রিয়।সবজির মধ্যে ঢেঁড়স আর টমেটো খাবো।

আম্মার সব সময় ঠিক চিন্তা থাকতো আমি কি খাবো।সব সময় যে আমার পছন্দ করা খাবার ঘরে থাকে এমনতো নয়।যেদিন রুই আনবে সেদিন আম্মা চার টুকরো সবার জন্য রান্না করে বাকী গুলো লবন হলুদ দিয়ে জ্বাল দিয়ে রেখে দিতো।আগামী দুই দিন আম্মা নিশ্চিন্ত থাকতো। এই মাছ দিয়ে আমাকে খাওয়াবে।ঢেঁড়স আমার খুব প্রিয় ছিলো কিন্তু ভাজি খাবো না। ঝুলের তরকারিতে দিতে হবে।সবার তো ভাজি প্রিয়।তরকারিতে ঢেঁড়স সহ্যই করতে পারে না।তাও আম্মা সব তরকারিতে ঢেঁড়স, টমেটো দিয়ে রাখতো। আমাদের এলাকার একটা জনপ্রিয় খাবার চ্যাঁপা শুটকি।এটার বিভিন্ন ধরনের রেসিপি হয়।তবে এতে ঝুল দেওয়া হয়না।আর যেকোনো ধরনের শুটকির সাথে টমেটো আর ঢেঁড়স আসলেই যায় না।আম্মা তাতেও ঝুল দিতো আর ঢেঁড়স টমেটো দিতো।ঘরের অন্য সদস্যদের পছন্দ না হলেও খেতে হবে।


আমার মেজু আপা মাঝে মাঝে খুব রাগ করতো।ঘরের সব রান্না যদি একজনের মত মতো চলে তাহলে আমরা সবাই খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে দেই।
আমার আম্মার বক্তব্য ছিলো একটা হাতের পাঁচ আঙুল সমান না।ও কিছু খাবে না। দুইটা ঢেঁড়স দিলে যদি খেয়ে নেয় তাহলে কি সমস্যা!
তোরা ঢেঁড়স খাবি না, তাহলেই তো মিঠে গেলো।আমার আব্বা খেতে বসে বলতো "আহা আজ খাবারটা এতো মজা হয়েছে আমাকে কেউ কুড়ালের বারি দিলেও খাবার ছাড়া যাবে না"।মজা শুনে আমি যাতে খেতে বসি।

আমি খুব রাগী। আম্মার কথা শুনতাম, সবি ভালো ছিলো, কিন্তু আমার বিরুদ্ধে গেলে আমি মানতে পারিনা।আমাকে বুঝিয়ে বলো আমি বুঝে যাবো মেনে নেবো কিন্তু রাগ করে বললে আমার মাথা গরম হয়ে যায়। তাই আম্মার কথা ছিলো ওর রাগ বেশি জানা কথা ওকে রাগীয়ে দেওয়ার  প্রয়োজন কি?তাই পরিবারের সবাই আমার মাথা হাতিয়ে হাতিয়ে চালাতো।তাই আমি রাগ করার সুযোগই পেতাম না।

ছোট বেলা আমার বয়সী অনেকে রোজা রাখতো।সহপাঠীরা বলতো আমি একটা রোজা রেখেছি,আরেক জন বলতো দুইটা, তিনটা,চারটা আমি বলতে পারতাম না।তাই একবার মনে মনে ঠিক করেছি রোজা এবছর রাখবই।প্রথম রোজার দিন সেহেরি খেয়ে ঘুম থেকে ওঠে মাঠে গিয়ে লুকিয়ে আছি। রোজা ভাঙবো না।আম্মা সেদিন গুড় আর মুড়ি বাটিতে নিয়ে সারাদিন আমাকে খুঁজে। 

আম্মার ভয় এতো ছোট বয়সে রোজা রাখলে নাকি গলা শুকিয়ে মারা যাবো।তারপর সাড়ে তিনটার দিকে ধরে এনে জোর করে পানি গলায় ঢেলে দিলো।আর আমি আম্মা চোখের আড়াল হলে পাগল হয়ে যেতাম।এমন করতাম যে আম্মা টয়লেটে গেলেও,আমি টয়লেটের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম।এখন দিনের পর দিন চলে যায় আম্মার মুখটা দেখি না....


(এই "আমি"টা আমার প্রবাসী বোন,তার মুখের কথা এগুলো)

<center>![IMG_20200405_164357.jpg](https://files.peakd.com/file/peakd-hive/shaonashraf/23u63LwYAK2SCmAVYkqbcmvXZ16pH93baDgf2JUxvXpGBPupGEFNCbd4eSbJTxoS63fu4.jpg)</center>
👍 , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , ,